পার’মা’ণবিক অ’স্ত্রে’র ভয়াবহতা
পার’মা’ণবিক অ’স্ত্রে’র ভয়াবহতা
বুঝতে গেলে ৮০ বছর পেছনে তাকাতে হয়। ইতিহাসে মাত্র দু'বার যু’দ্ধের জন্য এই অ’স্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে—হিরোশিমা আর নাগাসাকিতে। মাত্র দু’টি বোমায় ২ লাখের বেশি মানুষের মৃ’ত্যু হয়েছিল। বেঁচে যাওয়া হাজারো মানুষ আজীবন শরীর ও মনের ক্ষত নিয়ে বেঁচেছেন।
২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে এখনো পৃথিবীতে ১২ হাজারেরও বেশি পা’র’মা’ণ’বিক ওয়ারহেড রয়েছে। অর্থাৎ, এর ব্যবহারের সম্ভাবনা থেকেই যায়। সুতরাং, যদি কখনো সত্যি এমন কিছু ঘটে, তাহলে কী হতে পারে—তা জানা জরুরি।
ধরা যাক, একটি ১ মেগাটন ক্ষমতার বো’মা বি’স্ফোরিত হলো। হিরোশিমার লিটল বয় এর তুলনায় এটা প্রায় ৮০ গুণ বেশি শক্তিশালী। আবার আধুনিক কিছু বো’মার তুলনায় এটা মাঝারি মাত্রার।
বি’স্ফোরণ হতেই যেটা প্রথম ধাক্কা দেবে তা হলো তাপ আর আলো। আলো ও তাপ এতটাই তীব্র হবে যে, যারা বি’স্ফোরণের ২০ কিমি দূরেও থাকবে, তারা কয়েক মিনিটের জন্য চোখে অন্ধকার দেখতে পাবে। আর যদি রাত হয়, তবে সেই দূরত্ব বেড়ে ৮৫ কিমি পর্যন্তও যেতে পারে।
১১ কিমি পর্যন্ত হালকা পোড়া, ৮ কিমির মধ্যে ত্বক গলে যাওয়ার মতো অবস্থা হতে পারে। তবে এসব নির্ভর করে আবহাওয়া কেমন, আপনি কী রঙের কাপড় পরেছেন, এমনকি আশপাশে কী ধরণের ভবন বা গাছপালা রয়েছে। যদিও যারা বিস্ফো’রণের একেবারে কাছাকাছি, তাদের জন্য এসব কিছুই কাজে আসবে না।
কারণ বিস্ফো’রণের কেন্দ্রে তাপমাত্রা এতটাই ভয়াবহ—প্রায় ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপ সূর্যের কেন্দ্র থেকেও ৫ গুণ বেশি। এতো তাপ একজন মানুষকে এক নিমিষে গলিয়ে দিয়ে কার্বন বা মৌলিক কণায় পরিণত করে দিতে পারে।
তাপের পরে আসে দ্বিতীয় ধাক্কা—ব্লাস্ট ওয়েভ। এই বিস্ফো’রণ বাতাসকে চারদিক থেকে ধাক্কা দিয়ে ছড়িয়ে দেয়। হঠাৎ চাপের এই পরিবর্তনে ৬ কিমির মধ্যে ভবন ভেঙে পড়বে, বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ২৫৫ কিমি।
যদি কেউ এসব কিছু পেরিয়েও বেঁচে যায়, তখন সামনে আসে তেজস্ক্রিয়তার বিপদ। হিরোশিমা আর নাগাসাকির বো’মাগুলো ভূমির উপর ফাটানো হয়েছিল, ফলে তেমন ফলআউট হয়নি। কিন্তু যদি বি’স্ফোরণ ভূমিতে হয়, তার ফলাফল হবে আরো ভয়াবহ। বিকিরণে দূষিত ধূলিকণা বাতাসে ছড়িয়ে পড়বে। শরীরে ঢুকলে ক্যা’ন্সার, শারীরিক ক্ষতি, এমনকি প্রজন্মগত সমস্যা হতে হবে।
২০১৯ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়—যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ পা’রমা’ণবিক যুদ্ধ হলে পৃথিবী ঢুকে যাবে ‘নিউ’ক্লিয়ার উইন্টার’ এ। ধোঁয়া ও ছাই বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ায় সূর্যের আলো আটকে যাবে, খাদ্য সংকট হবে, শুরু হবে বৈশ্বিক দুর্ভিক্ষ। সম্প্রতি আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিউ’ক্লিয়ার টেস্ট থেকে সৃষ্ট রেডিওঅ্যাকটিভ কার্বনের চিহ্ন পাওয়া গেছে পৃথিবীর গভীরতম খাদ মারিয়ানা ট্রেঞ্চে।
এখন পর্যন্ত যা বললাম, তা কোনো সাই-ফাই গল্প নয়—এটাই নির্মম বাস্তবতা। আমরা সৌভাগ্যবান, কারণ এখনো পর্যন্ত পৃথিবী এমন কোনো সর্বনাশা পা’রমা’ণবিক যু’দ্ধের মুখোমুখি হয়নি। ভবিষ্যতে কি হবে জানি না। (Bigganneshi - বিজ্ঞান্বেষী)
তথ্যসূত্র: সায়েন্স এলার্ট
#war #nuclearwar #Bigganneshi #iran