জুলহাসের উরুজাহাজ VS বুয়েটের ইজিবাইক, কে সেরা??
মনে আছে সেই জুলহাসের বিমান বানানোর চেষ্টা? আকাশে উড়ার স্বপ্ন?
বুয়েটের মত প্রতিষ্ঠান যে ই-বাইকের নামে অটোরিকশা বানিয়েছে ,তাকে দেখলে অজপাড়া গায়ের দিনমজুরও হাসবে। এর চেয়ে পাড়ার গ্যারেজ মিস্ত্রিও এসমস্ত যন্ত্রপাতি কিনে একটা সো-কলড ই-বাইক বানিয়ে রাস্তায় নামাতে পারবে।
এত বছরের নামকরা প্রতিষ্ঠানের ই-বাইক যে হারে মিডিয়ায় বুয়েটের উদ্ভাবিত ই-বাইক বলে প্রচারণা চালাচ্ছে, তা লজ্জাজনক ও হাস্যকর।
দুনিয়ার অন্যান্য পাবলিক টেকনোলজিকাল গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেখানে যুগের চেয়ে এগিয়ে চিন্তাভাবনা করে আবিস্কারে মনযোগী হচ্ছে। আর পুরনো হয়ে যাওয়া বহুল প্রচলিত চায়না প্রযুক্তির ইজি-বাইকে একটু সংযোজন করে উদ্ভাবিত ই-বাইক বানিয়ে ফেলে যেন দেশের প্রযুক্তির দ্বার উন্মোচন করে দিলো।
এরোনোটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বলে একটা বিষয় আছে যেটার উপর পড়াশোনা করতে আগে বিদেশে যেতে হতো, এখন দেশেই পড়া যায়। একটি যানের আকাশে উড়া,যন্ত্রাংশ ইত্যাদি সম্পর্কিত নানান বিষয়ে শিক্ষার্থীরা ৪/৫ বছর ধরে পড়াশোনা করে। জুলহাসের অতো পড়াশোনা নাই, এরোনোটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কে তার পুঁথিগত বিদ্যাও নাই তারপরেও সে একটি যান তৈরি করেছে এবং সেটা আকাশে উড়িয়েছে। রাইট ব্রাদার্স ১৯১১ সালে এই জিনিস বানিয়েছিলো, পরবর্তীতে সেটাকে উন্নত করে বিমান তৈরি হয় এবং এখন এটি সারাবিশ্বের মানুষের কাছে অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন দেশ বিমান নিজেরা বানাতে পারে, আমরা পারিনা। অন্যদেশের সামান্য পুরাতন বা নতুন বিমান কিনে এনে আমরা চালাই। আমাদের ছেলে, মেয়েরা এরোনোটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে দেশের বাইরে গিয়ে চাকরিবাকরি করে আর কয়েকজন দেশের এয়ারলাইনসগুলো আর বিমান বাহিনীতে চাকরি করে। এরা বিমান বানায় না, মেরামত করতে পারে। জুলহাসের এটা তাহলে কি? এটা কি কোনো কাজে লাগবে? হ্যাঁ অবশ্যই লাগবে। একজন সাধারণ মানুষ এই বিষয়ে যথেষ্ট পড়াশোনা না করেও গড গিফটেড জ্ঞান দিয়ে একটা যানকে আকাশে উড়িয়েছেন। বাতাসের গতি, উড়ার দক্ষতা, জ্বালানি, ভরবেগ, মহাকর্ষ সূত্র এসব না জেনেই একটি বিমানকে আকাশে উড়ানো খুব সহজ বিষয় নয়। আমরা নিজেরা এটা বানাতে পারিনা, বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়৷ জুলহাসের এই ইনোভেশন আমাদের সন্তানদের উৎসাহ দেবে। জুলহাসের যা যা কমতি আছে সেগুলো তারা পূরণ করবে, একটা সময় নিজেরাই তৈরি করতে পারবো যাত্রীবাহী বা যুদ্ধ বিমান যা কিনা লক্ষ, কোটি ডলার দিয়ে কিনে আনতে হয় আমাদের। অভিনন্দন প্রিয় জুলহাস।